এপ্রিল ১৩, ২০১৯ কৃষি ফটো গ্যালারি শ্যামনগর
মিঠু বরকন্দাজ
শ্যামনগরে চিংড়ীতে মড়ক লাগায় মারাত্নক বিপর্যায়ের মুখে পড়েছে চিংড়ী চাষীরা। মৎস্য অধিদপ্তরে কর্মকর্তারা বলছে , হঠাৎ অসাভাবিক তাপ বৃদ্ধির কারণে চিংড়ী ঘেরের মাটি ও পানি গরম হওয়া চিংড়ী মরার এক মাত্র কারন। চাষীরা বলছে শুধু এবছর নয় দুইহাজার দশকের পর থেকে প্রতি বছর চিংড়ীতে মহামারী মড়কে চিংড়ী মরে যাচ্ছে। কোন রাসায়নিক সার বা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির উপকরনে কোন কাজ হচ্ছে না। বছরের শুরু ১লা জানুয়ারী থেকে শ্যামনগর উপজেলা ১২টি ইউনিয়নে ১৭৪৪২ হেক্টর জমিতে ছোট বড় প্রায় দুই হাজার চিংড়ী চাষীরা চিংড়ী ঘেরের মাছ চাষের উপযোগী করে বাগদার রেনু পোনা অবমুক্ত করে। পোনা অবমুক্ত করার মাস না পুরতেই চারিদিকে ৩ ইঞ্চি পরিমান হওয়ার সাথে সাথে বাগদা চিংড়ীতে মহামারী মড়ক লেগে উপজেলা প্রায় ৭০% চিংড়ী ঘের ইতোমধ্যে চিংড়ী শুন্য হয়ে পড়েছে। এই সমস্ত ঘের গুলোতে আবার নতুন করে পানি মাটি পরিচর্যা করে রেনু পোনা অবমুক্ত করতে হবে। সে কারনে পিছিয়ে গেল শ্যামনগরের চিংড়ী চাষ। আরও দুই মাস তাদের আবার অপেক্ষা করা লগবে নতুন চিংড়ীর অপেক্ষায় গতকাল সরেজমিনে ও উপজেলা বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাওয়া খবের এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। চাষীরা জানান গত বছর বাগদার মড়ক বা ভাইরাস তুলনামূলক কম ছিল। সে কারনে উপজেলার ছোট বড় অধিকাংশ চাষীরা চিংড়ী চাষে লাভবান হয়েছিল। সে লক্ষ নিয়ে এ বছর চিংড়ী চাষীরা মনের উদ্যামে ভালো ভাবে ঘেরে পরিচর্যা করে চিংড়ী চাষের উপযোগী করে লবন পানি উত্তোলন করে ঘেরে চিংড়ি পোনা অবমুক্ত করে। চাষীদের মুখের হাসি মুছে গেছে গত কয়েকদিন চিংড়ী মড়কের কারনে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে শ্যামনগর উপজেলা বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের ক্ষুদ্র চিংড়ী চাষী আজগার আলী জানান ১৯৭০ দশক থেকে লোনা পানির সোনা নামে খ্যাত চিংড়ী চাষ করে সাতক্ষীরা, খুলান ও বাগেরহাট জেলার চাষীরা সাবলম্বী হয়েছ্ েঅনেকের ভাগ্য পরিবর্তন ঘটে কুলি থেকে কোটি পতি হয়েছে এমন লোকের সংখ্যা অনেক বেশি। আবার হাতে গোনা কিছু চাষীরা এই চিংড়ী চাষে বঞ্চিত হয়ে হিরো থেকে জিরো হয়ে গেছে। ১৯৭০ দশক থেকে শুরু হওয়া চিংড়ী কোন রোগ বালাই ছাড়াই দু হাজার দশক পর্যন্ত খুব ভালো চলেছে। দুহাজার দশকের পর থেকে চিংড়ী চাষে নেমে আসে মহামারি মড়ক (ভাইরাস)। সেখান থেকে অদ্যাবধি পর্যন্ত প্রতি বছর কম বেশি চিংড়ীর মড়ক বা ভাইরাসের কারনে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে চিংড়ী চাষীরা। ভাইরাসের কারনে বিকল্প চিংড়ী চাষে লাভের জন্য বেশ কিছু প্রভাবশালী চিংড়ী চাষীরা দেশী-বিদেশী ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে আধা-নিবিড় পদ্ধতিতে চিংড়ী চাষ শুরু করেছে গত কয়েক বছর। কিন্তু, সেখানেও কোন পদ্ধতি টিকাতে পারছে না ওই চাষীরা। তাদের প্রকল্পেও মরে ছাপ হয়ে যাচ্ছে চিংড়ী। এমন কিছুটা ব্যক্ত করেন, এশিয়ার বৃহত্তম আধা-নিবিঢ় পদ্ধতিতে চিংড়ী উৎপাদন প্রকল্প শাওন ফিস প্রোঃ লিঃ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলহাজ্জ আব্দুস সাত্তার মোড়ল। চিংড়ীর মড়ক বা ভাইরাসের কারন নিয়ে দেশী বিদেশী বিভিন্ন গভেষকরা অনেকরকম মন্তব্য করেছেন । যার প্রয়োজনীয় ঔষধ ও উপকরণ বাজারে ভরপুর হয়ে গেছে। চাষীরা কিনে চিংড়ী ঘেরে প্রয়োগ করছে। কিন্তু, রক্ষা হচ্ছে না চিংড়ীর মড়ক। শুধু ভাইরাসের কারনে চিংড়ীর মড়ক কারন বললে ভূল, চিংড়ী ঘেরের পানি স্বল্পতার কারনে মাটি ও পানি রোদের তাপে মাত্রাধিক গরম হয়ে চিংড়ীর মড়ক দেখা যায়। তাছাড়া আধা-নিবিড় পদ্ধতিতে চিংড়ী ঘেরে যাদের চিংড়ী মরছে তার কারন মাত্রারিক্ত পোনা ছাড়া এর অন্যতম কারন। তিনি আরও বলেন, ভাইরাসও আছে তা নিয়ন্ত্রন করার কোন পদ্ধতি এখনও উদ্ভাবন করা সম্ভব হয়নি। চিংড়ী চাষে সরকার বছরে হাজার হাজার কোটি বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে। সেজন্য চিংড়ীর ভাইরাস বা মড়ক প্রতিরোধ নিয়ন্ত্রনের জন্য সরকার ব্যপক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।