রনজিৎ বর্মন শ্যামনগর(সাতক্ষীরা) প্রতিনিধিঃ

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় সুন্দরবন সংলগ্ন নীলডুমুর খোলপেটুয়া নদীতে রবিবার সকালে জেলা নাগরিক কমিটি,উপজেলা যুব ফোরাম,জেলা নাগরিক আন্দোলন মঞ্চ,শ্যামনগর জলবায়ু পরিষদ,লির্ডাস ও গাবুরা ইউনিয়ন জলবায়ু সহনশীল ফোরামের আয়োজনে উপকুলীয় এলাকায় বেড়ীবাঁধ পুনঃনির্মাণ ও সুপেয় পানির নিশ্চয়তার দাবীতে নেী-বন্ধন পরবর্তী নদীতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

নেী-বন্ধনে টেকসই বেড়ী বাঁধ নির্মাণ,সুপেয় পানির নিশ্চয়তা প্রদান করা,স্থানীয় সরকারকে বেড়ীবাঁধ ব্যবস্থাপনায় সম্পৃক্ত করার দাবী সম্বলিত প্লাকার্ড ,ফেষ্টুন নিয়ে শত শত নেীকা ও সাধারণ নাগরিক নদীতে নেীকা নিয়ে অংশ গ্রহণ করেন। এ সময় তারা খোলপেটুয়া নদীর পোড়াকাটলা এলাকা থেকে নীলডুমুর খেয়াঘাট পর্যন্ত দীর্ঘ লাইন নিয়ে নেীকা চড়ে দাবী জানান।

নেী-বন্ধন চলাকালে নেীকায় বসে লির্ডাসের নির্বাহী পরিচালক মোহন কুমার মন্ডল নেী-বন্ধনে ৩টি প্রধান দাবী জানান দাবী গুলি হল জলবায়ু পরিবর্তন ও দূর্যোগকে মাথায় রেখে স্থায়ী ও মজবুত বেড়ীবাঁধ পুনঃনির্মাণ করা, যার নিচে ১০০ ফুট,উপরে ৩০ ফুট এবং যার উচ্চতা হবে ৩০ ফুট।
বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য জরুরী তহবিল গঠন করা ও বাঁধ ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় সরকারকে সম্পৃক্ত করা। সর্ব শেষ দাবী উপকুলীয় সকল মানুষের খাবার পানির টেক সই ও স্থায়ী সমাধান করতে হবে।

মোহন কুমার মন্ডল লিখিত বক্তব্যে আরও বলেন সাতক্ষীরার শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলায় ৫৫৩ কিলোমিটার বেড়ীবাঁধ রয়েছে।এর মধ্যে ২৭ কিলোমিটার অধিক ঝুঁকিপূর্ণ। তিনি বলেন ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের পর শ্যামনগরে ৫,১৪ ও ১৫ নং পোল্ডারে ১৯২ কিলোমিটার বেড়ীবাঁধের ১৩ কিলোমিটারে ২৫টি স্থানে ভেঙ্গে গিয়ে এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ঘর-বাড়ী,গবাদিপশু,মাছ,গাছ পালা,কৃষি ফসল,চিংড়ী ফসল সহ অন্যান্য মিলিয়ে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২,৬৫২,৬৮১,৮০০ টাকার সমমূল্যের।

সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক আন্দোলন মঞ্চের সভাপতি মোঃ ফাইমুল হক কিসলুর সভাপতিত্বে নেী-বন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন শ্যামনগর উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম আতাউল হক দোলন। তিনি বক্তব্যে বলেন জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে কিন্ত আমাদের বাঁধের ডিজাইন পরিবর্তন হচ্ছেনা। এই এলাকার একটাই দাবী স্থায়ী মজবুত টেকসই বেড়ী বাঁধ নির্মাণের। তিনি বলেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের বার বার এলাকা পরিদর্শন করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনের সভাপতি মোঃ ফাইমুল হক কিসলু বলেন দুর্বল বেড়ীবাঁধের কারণে মানুষ,ফসল সব ক্ষতি গ্রস্থ হয়। এ কারণে তিনি কংক্রিটের বাঁধ তৈরী এবং সুপেয় পানির দাবী জানান।

বক্তব্যে জেলা নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আবুল কালাম আজাদ বলেন প্রায় সময় নদী গর্ভে চলে যাচ্ছে বেড়ী বাঁধ। এর ফলে এলাকার মানুষের জমির উপর দিয়ে নতুন করে বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। কিন্ত জমির মালিকরা কোন ক্ষতি পূরণ পাচ্ছেন না। তিনি দাবী জানান ক্ষতিগ্রস্থ জমির মালিকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ও জমি অধিগ্রহণের।
উপকুলীয় এলাকা বুড়িগোয়ালিনী ইউপি চেয়ারম্যান ভবতোষ কুমার মন্ডল বলেন একাধিক দূর্যোগের মধ্যে বসবাস করতে হয়। দূর্যোগের কারণে মানুষ স্থান পরিবর্তন করছেন। তিনি টেকসই বেড়ীবাঁধ নির্মাণ ও সুপেয় পানির নিশ্চয়তার দাবী জানান।

শ্যামনগর জলবায়ু পরিষদের সদস্য সচিব আশেক ই এলাহী বলেন বাঁধ ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় সরকারকে যুক্ত করতে হবে তাহলে বেড়ীবাঁধ রক্ষণাবেক্ষণ ভাল হবে।

অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান খালেদা আইয়ুব ডলি,৭১ টিভি চ্যানেলের জেলা প্রতিনিধি বরুণ ব্যানাজী প্রমুখ।

News Link: jubokantho.com
রবিবার, ৭ জুন ২০২০