নাগরিক সমাজ ও পরিবেশ আন্দোলনের নেতারা বলেছেন, বেড়িবাঁধ সংস্কারের অভাবে বিলীন হতে চলেছে উপকূলের বিস্তীর্ণ জনপদ। ঝুঁকি বাড়লে মানুষের জীবন-জীবিকা ধ্বংস হওয়ার। ঘূর্ণিঝড় আম্পানের পর ভেঙে যাওয়া বাঁধ সংস্কার করা হলেও পানি বাড়লেই বিভিন্ন স্থানে বাঁধ ভাঙছে। গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। জীবিকা হারিয়ে অসংখ্য মানুষ উদ্বাস্তু। তাই জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগকে মাথায় রেখে উপকূলীয় এলাকায় স্থায়ী ও টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ দ্রুত শুরু করতে হবে।
গতকাল শনিবার খুলনা মহানগরীর পিকচার প্যালেস মোড়ে আয়োজিত মানববন্ধন ও সমাবেশ থেকে এই আহ্বান জানানো হয়। সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলন, পরিবেশ সুরক্ষায় উপকূলীয় জোট, লিডার্স এবং সচেতন সংস্থা যৌথভাবে এই কর্মসূচির আয়োজন করে। সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্রের সভাপতিত্বে ও পরিবেশ সুরক্ষায় উপকূলীয় জোটের সদস্য সচিব এস এম ইকবাল হোসেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তৃতা করেন জোটের আহ্বায়ক এস এম শাহনওয়াজ আলী, কৃষি ও পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের সভাপতি শ্যামল সিংহ রায় বাবলু, খুলনা নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক আ ফ ম মহসীন, খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির সিজানুর রহমান বাবু, জন-উদ্যোগের মহেন্দ্রনাথ সেন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাকিলা পারভীন, অ্যাডভোকেট মো. বাবুল হাওলাদার, সাংবাদিক কৌশিক দে বাপি, শেখ মফিদুল ইসলাম, এম এ কাশেম, শাহ মামুনুর রহমান তুহীন, শেখ মো. নাসির উদ্দিন, এস এম এ রহিম, অধ্যক্ষ শিমুল বিল্লাহ বাপ্পি প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, প্রতিনিয়ত উপকূলের কোনো না কোনো স্থানে বাঁধ ভাঙছে। এতে মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। যতই সংস্কার করা হোক না কেন, ষাটের দশকে তৈরি করা আয়তনে ছোট উপকূলীয় বেড়িবাঁধ কোনোভাবেই ওই অঞ্চলকে সুরক্ষা দিতে পারবে না। তাই দ্রুত জলবাযু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগকে বিবেচনায় রেখে নতুন পরিকল্পনায় বাঁধ নির্মাণ করতে হবে। সেক্ষেত্রে সরকারের নেওয়া প্রকল্পগুলোর কাজ দ্রুত শুরু করতে হবে। তারা উপকূলের বেড়িবাঁধ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা পরিষদের আওতায় একটি জরুরি তহবিল গঠনের দাবি জানান।
সমাবেশে উপকূলের সার্বিক উন্নয়নে হাওর উন্নয়ন বোর্ডের ন্যায় উপকূলীয় পৃথক বোর্ড গঠনের দাবি জানিয়ে নেতারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগকে মাথায় রেখে স্থায়ী ও মজবুত বেড়িবাঁধ নির্মাণ করতে হবে, যার নিচে ১০০ ফুট, ওপরে ৩০ ফুট এবং যার উচ্চতা হবে ৩০ ফুট। বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য জরুরি তহবিল গঠন ও বাঁধ ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় সরকারকে সম্পৃক্ত করতে হবে। ওয়াপদা বাঁধের ১০০ মিটারের মধ্যে চিংড়ি বা কাঁকড়ার ঘের তৈরিতে সরকারের দেওয়া নিষেধাজ্ঞা দ্রুত কার্যকর করতে হবে। উপকূলীয় জনগণের নিরাপদ খাবার পানির টেকসই ও স্থায়ী সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
News Link:protidinersangbad.com